Saturday, January 26, 2019

অল্পবয়সী মহিলা এলেন ডাক্তারের কাছে।

অল্পবয়সী মহিলা এলেন ডাক্তারের কাছে।
"ম্যাডাম আমার ১ বছরের একটা বাচ্চা আছে। কিন্তু এরই মধ্যে আমি আবার গর্ভবতী হয়ে পড়েছি। এই মুহুর্তে দুটো বাচ্চা পালন করা আমাদের পক্ষে সম্ভব নয়।"
- "তাহলে আপনি কি করতে চান?"
- "আপনি আমার এবরশনের ব্যবস্থা করুন।"
Image result for অল্পবয়সী মহিলা এলেন ডাক্তারের কাছে।
ডাক্তার সাহেবা কিছুক্ষণ ভাবলেন, এরপর বললেন,
- "এর চেয়ে ভাল একটা উপায় আছে।"
- "কি উপায়?" সাগ্রহে জিজ্ঞেস করলেন মহিলা।
- "আপনার প্রথম বাবুটাকে আমরা দুজনে মিলে মেরে ফেলি। কেউ কিছু জানবে না। এতে সুবিধা হল দ্বিতীয়টা হবার আগে আপনিও কিছুটা সময় পাবেন। রেস্ট নিতে পারবেন।"
শিউরে উঠলেন মহিলা।
- "এ কি বলছেন আপনি! মা হয়ে নিজের সন্তানকে আমি খুন করব!"
ডাক্তার হাসলেন, বললেন,
"দ্বিতীয় বাচ্চাটা কি আপনার সন্তান নয়? তাকে কেন খুন করতে চাচ্ছেন?"
মহান আল্লাহ রব্বুল আলামীন আল কুরআনে বলেছেন - "দারিদ্রতার কারণে তোমরা তোমাদের সন্তানদের হত্যা করো না। আমিই তোমাদের রিযিক দেই, আমি তাদেরও রিযিকের ব্যবস্থা করব।"
(সুরা আন আম: ১৫১)

Facebook

প্রচন্ড রকম ডিপ্রেশনে আছেন?

প্রচন্ড রকম ডিপ্রেশনে আছেন?
নিজেকে পৃথিবীর সবথেকে অসুখী মানুষ মনে হচ্ছে?
খুব বেশি একাকিত্ব লাগে?
রাগ কন্ট্রোল করতে পারেন না?
পরিবারের সাথে, বন্ধু বান্ধবের সাথে মনোমালিন্য চলতেই থাকে?
কোনকিছুতেই মনে শান্তি আসছেনা?
.
Image result for প্রচন্ড রকম ডিপ্রেশনে আছেন?
তাহলে এক কাজ করুন, নামাজটা পড়ে ফেলুন, কিছুক্ষন মসজিদের বারান্দায় নীরবে বসে থাকুন, তারপর একটু কবরস্থান থেকে ঘুরে আসুন, ইচ্ছে করলে একটু কবর জিয়ারত ও করে নিতে পারেন।
তারপর বাসায় আসার পথে কোন অসহায় মানুষকে পাশে বসিয়ে আপনার স্বামর্থ অনুযায়ী কিছু খাওয়াতে পারেন অথবা টাকা পয়সা দিয়েও সাহায্য করতে পারেন।
সাহায্য করার পর অসহায় মানুষগুলোর চেহারার দিকে কিছুক্ষন তাকিয়ে দেখবেন, কতোটা খুশি হয় মানুষগুলো, হাসিটা দেখলে মনে হবে আপনিই পৃথিবীর সর্বশ্রেষ্ঠ সম্পদশালী, সুখি মানুষ, আপনার জন্য একটা মানুষ মন খুলে হাসছে, এর চেয়ে বড় প্রাপ্তি আর কি হতে পারে?
.
দেখবেন আরও হাজার বছর বাঁচতে ইচ্ছে করবে, সকল ডিপ্রেশন কেটে যাবে, নিজেকে সুখী মানুষ মনে হবে, নিজের জীবনের গুরুত্বটা ঠিক তখনি বুঝতে পারবেন। 

আমার জনৈক বান্ধবীর রিলেশনের অবস্থা ছিল খুবই খারাপ।

আমার জনৈক বান্ধবীর রিলেশনের অবস্থা ছিল খুবই খারাপ। প্রতিদিন বফের সাথে ঝগড়া হতো। প্রতিদিন মিটমাট হতো আর ও প্রায়ই আত্নহত্যা করতে যেত।
ওকে নিয়ে আমি ভয়ে ভয়ে থাকতাম বিধায় প্রতিদিন আমাকে খোঁজ নিতে হতো আজ ও আত্নহত্যা করতে যাবে কিনা।আর ও এমন মেয়ে মুখ ফুটে বলবে না ওর মন খারাপ নাকি ভালো। সুতরাং একটা ট্রিকস বের করলাম।
আমি প্রতিদিন ওকে জিজ্ঞেস করতাম, আচ্ছা বলতো, আমি কি দেখতে সুন্দর?
মন ভালো আর সব ঠিক থাকলে কখনো কোন অবস্থাতেই ও আমাকে সুন্দর মানবে না। হাসতে হাসতে বলবে, না,তুই জঘন্য, জঘন্য এবং জঘন্য।
মন খারাপ থাকলে বলবে, হু।‌
তখন আমার বুকের ভেতর রীতিমতো কাঁপতে থাকে, আমি আবার প্রশ্ন করি, কি? আমি সুন্দর?
-হু
:তোরচেয়েও?
-হু
:ঐযে শশী, রিয়া,দিয়া ওরা বেশী সুন্দর না আমি?
-তুই
:😱😱😱 তোর কি হয়েছে?
-কিছু হয়নাই
: অবশ্যই হয়েছে দ্যাখ, জীবনে কষ্ট আসেই। কষ্টকে অতিক্রম করে যে ওপরে উঠতে পারে সেই জীবনে....
মেসেজ ব্লক দিয়ে দিল।
আমি ফোনে মেসেজ দিলাম, কষ্টকে অতিক্রম করে যে ওপরে উঠতে পারে সেই জীবনে সফল।‌
ফোন বন্ধ হয়ে গেল।
আমি ওর বফকে ফোন দিলাম, ভাইয়া! ওতো আমাকে সুন্দর মানছে!!
-কি!! ও তোমাকে সুন্দর স্বীকার করেছে?? আমি এক্ষুনি দেখছি, আবার না জানি কি করে বসে আল্লাহ!!
সময় অতিবাহিত হয়! আমি আবার মেসেজ দিই, আচ্ছা আমি কি সুন্দর!!
- হে হে! তোর মতো বান্দর আমি আমার বাপের জন্মে দেখিনাই পেত্নী!
আমি হাফ ছেড়ে বাঁচি!

Monday, January 14, 2019

এইবার হবে পিঠা গল্প এত আদর স্নেহ কিসের

পিঠা
বাঙালী সংস্কৃতির অন্যতম একটা আকর্ষণীয় জিনিস এই পিঠা। তার উপর এই পিঠা আবার খাবার জিনিস। আর খেতে তো সবারই ভালো লাগে। তাই পিঠাও সবারই প্রিয়। পিঠা খেতে ভালো লাগে না এমন কারো অকালকুষ্মান্ড চেহারা এখনো দেখিনি। 
আমারো পিঠা ভাল্লাগে।এর কারন দুইটা, প্রথমত আমি খেতে ভালোবাসি আর দ্বিতীয়ত আমার মুখখানা মোটেই অকালকুষ্মান্ডের মত না।
আমার এখন চিতই পিঠা টা ভালো লাগে। এখন ভালো লাগে বললাম কারন টা পরে বলছি। গোল,চ্যাপ্টা, একপাশ নরম আরেকপাশ একদমই হালকা পোড়া পোড়া আর কিছুটা মুচমুচে। ওই মুচমুচে দিকটা দাতের নিচে পরলেই কেমন যেনো একটা ভালোলাগা কাজ করে আমার।আর উপরের নরম দিকটা ভালো লাগে যদি কোন ভর্তা দিয়ে খাই। হ্যা, এই চিতই পিঠা আমার পছন্দ হওয়ার মূল কারন এই ভর্তা। একটা দুইটা না অনেক পদের ভর্তা দিয়ে খাওয়া যায় এই পিঠা। ঝাল ভর্তা, ধনেপাতা ভর্তা, শরিষা ভর্তা, শুটকি ভর্তা, টমেটো ভর্তা আরো কত কি। একবার তো শুনলাম শীতকালে মিরপুরে কোথায় নাকি ৪২ পদের ভর্তা দিয়ে চিতই পিঠা বিক্রি করেন এক পিঠা বিক্রেতা। এই তথ্য পাওয়ার পর ভাবলাম ওই পিঠা বিক্রেতার পিঠা না খাই অন্তত ৪২ পদের ভর্তা দেখার জন্যে হলেও যাওয়া উচিৎ। যথারীতি বন্ধু বান্ধবের থেকে ঠিকানা যোগাড় করে এক শীতের সন্ধ্যায় ওই দোকানের সামনে যেয়ে উপস্থিত হলাম। আর সেখানে যেয়ে একটা জিনিস বুঝলাম যে মানুষ এইখানে পিঠা খেতে আসে না,আসে ওই ৪২ পদের ভর্তা খেতে।
এই গেলো এখনকার ভালোলাগা চিতই এর কথা এবার বলবো আগের ভালোলাগা ভাপা পিঠার কথা। হ্যা আগে ছোট বেলায় আমার পছন্দের পিঠা ছিলো এই ভাপা পিঠা। গ্রামে থাকতাম, অনেক ছোট ছিলাম নার্সারী তে পড়তাম তখন। শীতের সকালে দাদী বাড়ির উঠোনে ছোট্ট মাটির চুলোয় ভাপা পিঠা বিক্রি করতেন এক বুড়ি মহিলা। উনার বানানো ভাপা পিঠা আমার জীবনে খাওয়া সবচেয়ে মজাদার ভাপা পিঠা ছিলো। চালের গুড়ার তৈরী সাদা অংশ টা ছিলো একদম নরম স্পঞ্জের মত আর ভিতরে থাকতো কুসুম গরম গলে যাওয়া খেজুরের গুর। সকালে আমি স্কুলে যাওয়ার জন্য যখন তৈরী হতাম তখন ঘর থেকেই শুনতে পেতাম কেউ বলছে "ও বানু বড়মা আমার এই বাটিতি ৫ টা ধূপ্পিটে দেও দিনি,ওই সুহাগের বাপ খেইয়ে বেরবে এট্টু তাড়াতড়ি কইরে দেও" আবার কেউ বলতো "ওইদেকো শিগগি দেও দিনি পিটে গুনু আমার ছেইলের ইশকুলির যে দেরী হই যাচ্চে"। হ্যা, ওই বুড়ি মহিলার নাম ছিলো বানু বড়মা।বানু বড়মা বললাম কারন কখনো কাওকে বানু বড়মা ছাড়া অন্য কোন নামে উনাকে ডাকতে শুনিনি। ছোট বড়, ছেলে বুড়ো সবাই ই বানু বড়মা বলেই ডাকতো। আর একটা কথা আমাদের গ্রামে ভাপা পিঠাকে বলে ধূপ পিঠা। দাদীর কাছে জানতে চেয়েছিলাম ভাপা পিঠাকে ধূপ পিঠা বলার কারন কি? দাদী বলেছিলেন পিঠা বানানোর পর পিঠার উপর দিয়ে যে ধোয়া সহ গরম ভাপ ওঠে মুলত ওই ধোয়ার কারনেই নাম হয়ে গেছে ধূপ পিঠা।
ক্লাস ওয়ান এ থাকাকালীন ঢাকায় চলে আসি।এর পর যখন ক্লাস এইট এ পড়ি তখন একদিন আম্মাকে বললাম ভাপা পিঠা বানিয়ে দিতে বানু বড়মার মত করে। বানু বড়মা ততদিনে খোদার প্রিয় হয়ে গেছিলেন। তাই অনেক দিন খাওয়া হয়নি উনার তৈরী সেই ভাপা পিঠা। আম্মা সেইদিন একটা একটা করে ভাপা পিঠা বানাচ্ছিলেন আর আমি তাতে কামড় দিয়ে বলছিলাম বানু বড়মার মত হয়নি এইটাও। একসময় আম্মা রান্না ঘর থেকে উঠে চলে যেতে যেতে বললেন "বানু বড়মার মত পিঠা খাওয়া লাগবে না, যা বানাইছি তাই খা"। আমার সামনে তখন সব আধ কামড়ানো ভাপা পিঠে পরে আছে আর সেইদিন আমি একটা জিনিস বুঝেছিলাম যে খাবার বানানো টা একটা আর্ট।
এখন শীতকালে প্রায়ই যখন বন্ধুদের সাথে রাস্তায় দাঁড়িয়ে বিভিন্ন পদের ভর্তা দিয়ে চিতই পিঠা খাই তখন মাঝে মাঝেই চোখ চলে যায় সদ্য চুলা থেকে উঠানো গরম ধোয়া ওঠা ভাপা পিঠের উপর আর মনে পরে বানু বড়মার ধূপ্পিটের কথা।

Thursday, January 3, 2019

পাগল বলে মানুষগুলোকে অভহেলা না করে পাশে থাকুন এভাবে ||sumon iqbal, fahan...

ভালো বাসার অসাধারন গল্প ১

সময় সন্ধ্যা ৬.৩০ । পলাশ বাসায় ফেরার সময় হয়ে গিয়েছে ।
রুপা আজ শাড়ি পরেছে । পলাশের প্রিয় নীল রঙের শাড়ি আর খোঁপায় বেলি ফুলের মালা । রুপা প্রায়ই পলাশ বাসায় ফেরার আগে এমন শাড়ি পরে হালকা সাজগোজ করে থাকে । সংসারের শুরু থেকেই এমনটি করে আসছে । পলাশ অফিস থেকে বাসায় ফিরলে এভাবে শাড়ি পরে সেজে ওকে সারপ্রাইজ দিতে খুব ভালোবাসে রুপা । প্রথম প্রথম পলাশ চমকালেও এখন আর চমকায়না তবে মনে মনে অপেক্ষায় থাকে কবে রুপা ওমন করে সেজে দরজা খুলে দিবে আর ওর হাসি হাসি স্নিগ্ধ মুখখানি দেখে তার সারাদিনের ক্লান্তি একনিমিষে দূর হয়ে যাবে ।
আজকে কোন বিশেষ দিন না হলেও রুপা অনেক খুশী কারন আজ সে পলাশকে ওর জীবনের অন্যতম একটি খুশীর খবর দিতে যাচ্ছে ।
৬.৫০ হয়ে গেল কিন্তু পলাশ এখনও আসছেনা। রুপা একবার ভাবলো ফোন দিবে কিন্তু দিলনা । ও খুব চালাক । বেশী ফোন দিলে ঠিক বুঝে ফেলবে এদিকে রুপা কোন গোল পাকাচ্ছে । শেষমেশ ওর সারপ্রাইজের মজাটাই যাবে শেষ হয়ে ।
এই ফাঁকে রুপা ঘর গোছাতে লেগে গেল । পলাশ অনেক গোছ গাছ সবকিছুতে তাই রুপাও খেয়াল রাখে সবকিছু একটু বেশীই । এই যেমন বিছানার চাঁদর এলোমেলো থাকা ওর একদম পছন্দ না । তাই ও যখনই ওয়াশরুমে যায় রুপা চট করে বিছানার চাঁদরটা টান টান করে ফেলে।
কাজ না করলেও পলাশ আবার খুব সুন্দর গুছিয়ে কাজ করতে পারে । নতুন সংসারে আসার পর রুপা অনেক কিছু পারতো না তখন পলাশ হাতে ধরে ওকে সব শিখিয়ে দিয়েছে । কিন্তু এখন এক গ্লাস পানিও ঢেলে খেতে দেয়না ওকে রুপা ।
একদিন দুষ্টুমি করে পলাশ বলছিলো তুমি আমাকে এত আদর যত্ন কর মাঝে মাঝে আমার নিজেকে মহারাজা মহারাজা লাগে । রুপা হাসি দিয়ে বলেছিল তুমি তো আমার মহারাজাই ।
আচ্ছা? মহারাজাদের কিন্তু অনেকগুলো বউ থাকে জানো তো ? তাহলে আমিও কিন্তু অনেকগুলো বিয়ে করবো । তবে তুমি থাকবে আমার প্রধান রানী। পলাশ হাসতে লাগলো ।
ইশ! আসছে ! আমি কিন্তু অনেক পাঁজি। আমি ছাড়া আর কোন মেয়েকে তোমার ছায়ার কাছেও আসতে দিবোনা । মেরে দিবো কিন্তু একদম ।
হা হা ! আমাকে না মেরে তুমি ওদেরকে মারবে কেন ?
তোমাকে আমি ভালোবাসিনা তোমাকে কেন কিছু করবো ছিঃ ! ওদেরকেই মেরে ভাগিয়ে দিবো ।
মুহূর্তেই যেন ঝাসি কি রানীর রুপ ধারন করে ফেললো রুপা ।
বাসে করে বাসায় ফিরতে ফিরতে পলাশ বার বার হাতের খামটার দিকে তাকাচ্ছে । ওর স্বপ্ন হাতের মুঠোয়। জীবনে প্রতিষ্ঠিত হওয়ার ইচ্ছে সব ছেলেরই থাকে পলাশও তার ব্যতিক্রম নয় । ঢাকায় একটি মাল্টিন্যাশনাল কোম্পানিতে ভালো পোষ্টে চাকরী করলেও আরও কিছু সাফল্য অর্জনের স্বপ্ন ওকে পেয়ে বসেছিল । সেই স্বপ্ন এখন ওর হাতের খামটির ভেতরে । কিন্তু খবরটি সে রুপাকে কিভাবে দিবে তা ভেবে পাচ্ছেনা । খবরটি শোনার পর বেচারীর মনের অবস্থা কেমন হবে তা ভাবলেই ওর বুকের ভেতরটা মোচড় দিয়ে উঠে ।
কেন যে মেয়েটি এতো ভালোবাসে আমাকে । মাঝে মাঝে ওর আমাকে এতো বেশী ভালোবাসাটাও কেমন যেন ভারী মনে হয় । একটু কম ভালোবাসলেও তো বাঁচা যায় । এই মুহূর্তে মনে হচ্ছে রুপা যদি আমাকে একটু কম ভালোবাসতো তাহলে হয়তো আমার জন্য সবকিছু সহজ হতো ।
পলাশ এবং রুপার সংসারের বয়স ৯ মাস । প্রায় ৩ বছর প্রেম করার পর দুই পরিবারের সম্মতিতে বিয়ে হয় ওদের । কিন্তু তাও খুব একটা সহজ ছিলনা । রুপার পরিবার সম্পর্ক করে বিয়ের ব্যাপারে রাজী হচ্ছিলো না । কিন্তু রুপার এককথা সে পলাশ ছাড়া আর কাউকে বিয়ে করবেনা তা সে যে হোক না কেন । শেষ পর্যন্ত সবাইকে মানিয়ে সংসার জীবনে পা রাখতে সক্ষম হয় দুজনে । দুই পরিবারই থাকে চিটাগাং । আর ওরা দুজন পলাশের চাকরী সুত্রে ঢাকায় ।
দুই রুমের ছোট ছিমছাম একটা বাসা ওদের । রুপার খুব সখ ছিলো ওদের বাসায় বড় একটা বারান্দা থাকবে । সেখানে বেলি, জবা, গাঁদা ও গোলাপ ফুলের গাছ থাকবে আর থাকবে দুইটা বেতের চেয়ার। যখন ও বাসায় একা থাকবে তখন ওখানে বসে গল্পের বই পড়বে আর পলাশের ছুটির দিনে একসাথে বসে চা খাবে আর গল্প করবে । বাস স্টপ থেকে একটু দূরে হলেও বাসাটায় একটা বড় বারান্দা আছে তাই পলাশ এই বাসাটাই নিয়েছে শুধুমাত্র রুপার জন্য । দুজনে মিলে অনেক ঘুরে ঘুরে সংসারের সবকিছু কিনেছে । আর বারান্দার ফুলগাছগুলো সব রুপার কেনা ।
বিয়ের রাতে পলাশ রুপাকে জিজ্ঞেস করেছিল এখনতো তুমি আমার বউ । বউ হিসেবে তুমি আমার কাছে কি চাও । রুপা হেসে বলেছিল আমার যা চাওয়ার তাতো আমি পেয়েই গিয়েছি । তুমি আমাকে তোমার বউ হিসেবে স্বীকৃতি দিয়েছ এর চেয়ে বড় পাওয়া আমার জীবনে আর কিছু নেই । এখন শুধু তোমার বউ হয়ে সারাজীবন তোমাকে ভালোবাসার অধিকারটুকু চাই আর চাই চোখ বন্ধ করে তোমাকে বিশ্বাস করে তোমার উপর ভরসা করে নিশ্চিন্তে তোমার সাথে সংসার করতে । আর আমাকে খুব বেশী ভালো না বাসলেও চলবে তোমার । রুপা হেসে দিল । শুধু যতটুকু ভালোবাসলে আমি ভারমুক্ত থাকতে পারবো ততটুকু বেসো ।
পলাশ কিছু বলতে যাচ্ছিলো । রুপা ওকে চুপ করিয়ে দিয়ে বললো, দেখ আজকে আর কোন কথা না । আমার যে বিশ্বাসই হচ্ছেনা আমি তোমার বউ হতে পেরেছি। এটা যে আমার কত বড় সুখ তা তুমি বুঝবেনা । আজকে আমি সারারাত তোমার বুকে মাথা রেখে চুপ করে শুয়ে থাকবো যতক্ষণ মন চায় আর আমার জীবনের শ্রেষ্ঠ এই সুখটুকু অনুভব করবো । পলাশ হেসে রুপাকে তার বুকে টেনে নিলো ।
Image result for প্রেম
রুপা কেমিস্ট্রি তে মাস্টার্স করেছে । বিয়ের পর খুব ভালো একটা কোম্পানিতে ওর চাকরী হয় । কিন্তু ও বলেছিল আমি শুধুই সংসার করবো । সকালে ঘুম থেকে উঠে তোমাকে নাস্তা করে দিবো, তুমি অফিস যাওয়ার সময় এটা ওটা এগিয়ে দিবো, তোমার কাপড় ধুয়ে দিবো, কাপড় গুছিয়ে রাখবো, তোমার পছন্দের খাবার রান্না করবো, ঘর গোছাবো, তুমি অফিস থেকে ফেরার সময় হলে বারান্দায় দাড়িয়ে তোমার ফেরার অপেক্ষা করবো তারপর তুমি আসলে দৌড়ে গিয়ে দরজা খুলে দিবো ।
এসব ভাবতে ভাবতে বাস চলে এলো গন্তব্যে । একটু হেটে বাসায় যাওয়ার আগে সামনে চায়ের দোকানে বসলো পলাশ । মানসিক ভাবে অনেক দুর্বল লাগছে ওর । একদিকে এতদিনের একটা স্বপ্ন পুরণ অন্যদিকে রুপার মলিন মুখখানি। কি করবে কিছুই বুঝতে পারছেনা। প্রথমে সে এতকিছু ভাবেনি কিন্তু আজ যেন দুদিকের টানাপোড়নের যুদ্ধে ভেতরে ভেতরে রক্তাক্ত হচ্ছে ।
সময় যখন ৭.২০ তখন পলাশকে ফোন দিল রুপা ।
কইগো তুমি । দেরী হচ্ছে যে ?
এইতো চলে এসেছি, বাসার কাছেই ।
আচ্ছা ঠিক আছে, আসো ।
সারাদিন কাজ করতে করতে কিভাবে সময় চলে যায় বুঝেইনা কিছু রুপা কিন্তু সন্ধার পর থেকে অপেক্ষার প্রহর যেন আর শেষই হয়না । মানুষটা যখন বাসায় থাকে কোন কথাবার্তা না বলে যদি লাইট অফ করে ঘুমিয়েও থাকে তবুও কি শান্তি লাগে মনে । ঘরে গিয়ে যখন মানুষটাকে দেখে তখন নিজেকে পরিপূর্ণ মনে হয়।
বিয়ের দুই তিন মাস পরের কথা । সব বন্ধুরা মিলে আরেক বন্ধুর বাসায় গেট টুগেদারের পার্টিতে একরকম জোর করে পলাশ কে রাতে রেখে দিয়েছিলো । রাতের বেলা দুঃস্বপ্ন দেখে ভয়ে ওপাশে পলাশকে ধরতে গিয়ে দেখে ও পাশে নেই তখন আরও বেশী ভয় পেয়ে গিয়েছিলো রুপা । তারপর সারারাত লাইট অন করে ঘুমিয়েছিল ।
পরেরদিন বাসায় ফিরলে কাঁদো কাঁদো হয়ে বলেছিল তুমি আর কখনও আমাকে ছেড়ে রাতের বেলা বাইরে থাকবেনা । পলাশ রুপাকে কাছে টেনে নিয়ে বার বার সরি বলছিলো আর কথা দিয়েছিলো আর কখনও ওকে একা রেখে বাইরে থাকবেনা ।
এসব ভাবতে ভাবতে কলিংবেল বেজে উঠলো । কাজের মেয়েটি দৌড়ে যাচ্ছিলো দরজা খুলতে ।
রুপা বলল তোর ভাইয়া এসেছে আমি দরজা খুলবো তুই ভেতরে যা ।
খবরটি শোনার পর পলাশের উচ্ছ্বসিত মুখখানি কল্পনা করতেই কি যে ভালো লাগছে রুপার । সামনা সামনি তা দেখার আর তর সইছেনা ।
একদিন ইউটিউবে ছোট বাচ্চাদের মজার কিছু ভিডিও দেখছিলো আর হাসতে হাসতে গড়িয়ে পরছিলো পলাশ। বাচ্চারা তো আসলেই অনেক কিউট হয় । দেখ দেখ কি করছে দুষ্ট গুলো । আমাদের একটা হলেও অনেক মজা হতো ।
তখনই রুপা ভেবেছিলো পলাশকে একটি লিটল এঞ্জেল উপহার দিবে । যার সাথে ও খেলবে দুষ্টুমি করবে ।
পলাশ ঘরে ঢুকল একদম মনমরা হয়ে । ও ভেবেছে কোনরকম ভুমিকা না করে রুপার হাতেই চিঠিটা দিয়ে দিবে । রুপা এত বেশী আনন্দিত যে পলাশের মনমরা চেহারা খেয়ালই করলো না ।
পলাশ দেখলো টেবিলের উপর একটা কেক, কিছু মোমবাতি আর একগুচ্ছ ফুল ।
আজকে কি কোন বিশেষ দিন ? মানে কোন জন্মদিন বা বিবাহবার্ষিকী এমন কিছু ?
রুপা হেসে দিয়ে বললো তুমি যেদিন আমার জীবনে এসেছো তারপর থেকে প্রতিটি দিনই আমার জন্য বিশেষ । যাওতো তাড়াতাড়ি ফ্রেশ হয়ে আসো । তোমার জন্য একটি সারপ্রাইজ অপেক্ষা করছে ।
আমি আজ তোমাকে যে সারপ্রাইজ দিতে যাচ্ছি তার চেয়ে বড় আর কি সারপ্রাইজ হতে পারে ? পলাশ ভেতরে যেতে যেতে মনে মনে বললো ।
ফ্রেশ হয়ে পলাশ ডাইনিং রুমে গেলো । হাতে চিঠিটা । এই চিঠিটার ভার সে আর নিতে পারছেনা । রুপা কিছু বলার আগেই তার হাতে চিঠিটা দিল পলাশ ।
কি এটা ?
একটা লেটার । খুলে দেখো ।
রুপা চিঠিটা খুলে পড়তে শুরু করলো । মুহূর্তের মধ্যে রুপার চেহারার রঙ পাল্টে গেলো ।
Congratulation Mr Palash Ahmed. We are pleased to inform you that you have been appointed for the position of a Branch Manager for Singapore Branch.
রুপা চিঠিটা পড়তে পড়তে পলাশ কেকের প্যাকেটটা খুলে হতভম্ব হয়ে গেলো ।
Congratulation Love. You are going to be a father.
দুজন দুজনের মুখের দিকে তাকিয়ে স্তব্ধ হয়ে রইলো । দুজনই কি বলবে ভেবে পাচ্ছেনা ।
রাতের খাবার খেয়ে দুজনে বারান্দার মেঝেতে হেলান দিয়ে বসেছে ।
রুপাই শুরু করলো কথা ।
তুমি যে ওখানে অ্যাপ্লিকেশন করেছো আমাকে বলোনি কেন আগে ?
আসলে তখন সিনিয়ররা সবাই করছিলো তাই আমিও করে দিয়েছিলাম । যদিও চাইছিলাম হোক কিন্তু এত বাঘা বাঘা মানুষের মাঝে আমারই যে হয়ে যাবে তা বুঝিনি আর তখন এত কিছু ভাবিওনি । তুমিও তো আমাকে কিছু বলোনি ।
আমি তোমাকে সারপ্রাইজ দিতে চেয়েছিলাম ।
তারপর দুজনেই চুপ ।
অন্ধকারে পলাশ রুপার মুখটা দেখতে পাচ্ছেনা কিন্তু বুঝতে পারছে ও কাঁদছে ।
পলাশ কিছুক্ষণ ভেবে যা ডিসিশন নেওয়ার নিয়ে ফেললো । এই মেয়েটি, তার ভালোবাসা, তাদের অনাগত সন্তান, ওদের এই খুনসুটির সংসার এসব ফেলে ও কোথাও যাবেনা । এর চেয়ে বড় পাওয়া বড় অর্জন জীবনে আর কি হতে পারে ।
পলাশ একটানে রুপাকে কাছে নিয়ে আসলো ।
আচ্ছা , তুমি আমাকে ভালোবাসোতো ?
রুপা অভিমান করে ঠোঁট বাকিয়ে বললো, না ।
যাহ বাবা, যে কিনা আমাকে ভালোই বাসেনা তার জন্য আমার সিঙ্গাপুরের চাকরী না করে দিয়ে কি লাভ? ভালোবাসলে না হয় একটু ভেবে দেখা যেতো ।
রুপা খুশীতে বোকার মতো আরও বেশী করে কেঁদে উঠলো । আর পলাশ উঠলো হেসে ।
পলাশ বলল , আমাদের ছেলে হলে ভালো হয় না মেয়ে ?
আমার ছেলে পছন্দ রুপা বললো
আল্লাহ যা দেয় আলহামদুলিল্লাহ শুধু তোমার মতো গাধী না হলেই হলো ।
কি আমি গাধী ? তোমার মতো দুষ্টু হলে একটা পিট্টি দিবো ওকে ।
এই খবরদার। আমার বাবুর গায়ে হাত তোলা যাবেনা কিন্তু ।
ইশ তোমার একার নাকি আমারও ।
আমি কিন্তু ওকে স্কুলে পড়াবোনা । নিজে পড়াবো আর ধর্মীয় শিক্ষা দিবো । তবে তোমার কাছে ওকে পড়তে দেওয়া যাবেনা । তুমি যে বোকা কি পড়াতে কি পড়াবে, কি ভুল পড়াবে, পলাশ দুষ্টুমি করতে করতে বললো ।
আচ্ছা! তাই বুঝি ? আমি বোকা ? তোমার বাবু তুমি যেভাবে খুশী সেভাবে বড় করো । আমি আমার সংসার নিয়েই থাকবো ।
এমন হাজারো দুষ্টু আর মিষ্টি কথায় ওদের খুনসুটি চলতে লাগলো আর চলতে লাগলো ওদের খুনসুটির সংসার ।
কি ভাবে সুটিং করে দেখে নিনঃ লিঙ্ক